গত কয়েকদিন যাবত অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা তে অতিরিক্ত পরিমাণে মুরগি মরার ফলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও ভয় কাজ করছে। প্রাথমিক অনুমান করা হচ্ছে এই মুরগি মরার পেছনে রহস্যময় ভাইরাস আর তার ফলে এত পরিমাণে মুরগি মারা যাচ্ছে দিনের পর দিন। কিছু মানুষ অনুমান করছেন এত পরিমাণে মুরগি মরার পিছনে বাট ফ্লু নামক ভাইরাস দায়ী। তবে প্রাথমিক অনুমানে মনে করা হচ্ছে অন্য কোন ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে এত মুরগি মারা যাচ্ছে। যদিও স্পষ্ট ভাবে এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি, এই ভাইরাসের চরিত্র সম্বন্ধে। তবে যাই হোক না কেন এই ভাইরাসের কারণে এই দুই রাজ্যে তে ব্যাপকভাবে মুরগির দাম কমে গিয়েছে। যার ফলে এই মুরগি চাষীরা ব্যাপক পরিমাণে ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এখন বর্তমানে এই ভাইরাসটি শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র ও ছত্তিশগড়ে মুরগীদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বেশি পরিমাণে।
বিষয় সূচী :-
এই ভাইরাস ঠেকাতে কেন্দ্র সরকার কি পদক্ষেপ নিচ্ছে
এত হাজার হাজার পরিমাণ মুরগির মৃত্যুর পেছনে কেন্দ্র সরকার এর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এত মুরগির মৃত্যুর ফলে এতে করে ডিম উৎপাদন ও মুরগির মাংসের উৎপাদন হ্রাস হবে। এসব কারণের জন্য কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকার গুলিকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে, যাতে করে এই রোগের নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এখন জানা গেছে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনায় তেলেঙ্গানা পশুপালন দপ্তর সমস্ত নির্দেশ অনুসরণ করে পদক্ষেপ নিচ্ছে এই রোগ ঠেকানোর জন্য। এছাড়াও এই সব রাজ্যের পশুপালন দপ্তর বিশেষ সচিব সমস্ত জেলার জেলা শাসকের প্রয়োজনীয় সমস্ত নির্দেশ জারি করেছে।
এই পোল্ট্রি খামারের মালিকদের কি কি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়
এই সমস্ত পোল্ট্রি খামারের মালিকদের কে বলা হয়েছে বায়ো সিকিউরিটি অর্থাৎ জীবাণুন মুক্ত নিরাপত্তা নীতি অনুসরণ করতে। এছাড়াও যে সমস্ত মুরগিগুলো সংক্রমিত হয়ে গেছে ও মারা যাচ্ছে সেই সমস্ত মুরগি গুলোকে মাটিতে পুঁতে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া মুরগি পরিবহনের ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পদ্ধতি অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বলা হয়েছে, মরা মুরগিগুলোকে বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কোন মতে এই মরা মুরগিগুলোকে বিক্রি করা যাবে না ক্রেতার কাছে।
মুরগির মাংস কেনা ক্রেতাদেরকে কি সতর্কতা দেওয়া হয়েছে
মুরগির মাংস কেনার জন্য ও ক্রেতাদেরকে মুরগির মাংস খাবার আগে বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ক্রেতাদেরকে বলা হয়েছে বাজারে গিয়ে মাংস কেনার সময় আগে থেকে কেটে রাখা মাংস না কিনতে, সামনে দাঁড়িয়ে থেকে জ্যান্ত মুরগি কাটিয়ে তারপর কেনার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও মাংসটা বাড়ি নিয়ে যাবার পরে ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে তারপর রান্না করতে বলা হয়েছে।
এই ভাইরাসের কারনে পোল্ট্রি শিল্পে কতটা প্রভাব পড়তে পারে
এই অজানা ভাইরাসের কারণে তেলেঙ্গানার কামার রেড্ডি জেলাতে বিপুল সংখ্যক মুরগি মারা গিয়েছে। এছাড়াও তেমনি তীরমালাপুর ও বীরপুর এই সব পোল্ট্রি ফার্মে ৬ হাজারের বেশি ব্রয়লার মুরগি মারা গিয়েছে। এইসব কারণে ব্রয়লার মুরগির শিল্পের ওপর ব্যাপক পরিমাণে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এর ফলে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক পরিমাণে টাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এসবের ফলে পশ্চিমবঙ্গের ওপর কতটা প্রভাব পড়তে পারে
এই ভাইরাসের কারণে পশ্চিমবঙ্গের উপর এর প্রভাব দেখা দিচ্ছে। এর কারণ হলো অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মূলত পশ্চিমবঙ্গের ডিম আমদানি করা হতো। যার ফলে পশ্চিমবঙ্গে তে এই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। যদিও ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশন এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ডিম নিয়ে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। তারা জানিয়েছে নভেম্বর মাস থেকেই এই সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে সতর্কতা অবলম্বন করেছে রাজ্য।
1 thought on “Bird Flu : অজানা ভাইরাসের লক্ষ লক্ষ মুরগি মারা যাচ্ছে”